ক্ষেতে ক্ষেতে ফলছে স্বর্ণ, তরমুজের ব্যাপক ফলন | তরমুজ চাষে অধিক লাভ
বর্তমান সময়ে তরমুজ চাষ করে লাভবান হওয়ায় মহা খুশী তরমুজ চাষিরা। তারা বলছেন, “যেন ক্ষেতে ক্ষেতে স্বর্ণ ফলছে।” তাই চলুন জেনে আসি তরমুজ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।
বর্তমানে তরমুজের বাম্পার ফলন ও বাজার দাম ভালো পাওয়ায় খুশি তরমুজ চাষিরা। কোনো চাষী ক্ষেত থেকেই তরমুজ বিক্রি করছেন আবার কেউবা পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। আর তরমুজে এই ব্যাপক উৎপাদন থেকে খরচ পুষিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তরমুজ চাষীরা।
তরমুজ চাষিরা জানান, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর তরমুজ চাষে আর্থিকভাবে লাভের মুখ দেখছেন তারা। এ বছর তরমুজ ফলনে কোনো বিপর্যয় নেই। ফলে সন্তুষ্ট তরমুজ চাষিরা।
তরমুজ চাষ পদ্ধতি
তরমুজ একটি উৎকৃষ্ট ও সুস্বাদু ফল। চট্টগ্রাম, পাবনা, যশোর, ঢাকা, বগুড়া, নাটোর, ফরিদপুর ও বরিশালে তরমুজের চাষ ও ফলন বেশী হযয়ে থাকে। তরমুজের প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশে ৯৩ শতাংশ জলীয় অংশ সহ আমিষ, শ্বেতসার, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, খাদ্যপ্রাণ রয়েছে।
আর বর্তমান সময়ে তরমুজ চাষ করে মহা খুশী তরমুজ চাষিরা। তারা বলছেন, “যেন ক্ষেতে ক্ষেতে স্বর্ণ ফলছে।” এবছর তরমুজে ব্যাপক ফলনে আর্থিকভাবে লাভবান তারা। তাই চলুন জেনে নিই তরমুজ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।
তরমুজ চাষের জলবায়ু ও মাটি
তরমুজ চাষের জন্য প্রচুর সূর্যালোক ও শুষ্ক জলবায়ু প্রয়োজন। কারণ, তরমুজ খুব ঠাণ্ডা তেমন সহ্য করতে পারে না। তরমুজ চাষের সর্বাপেক্ষা উপযোগী আদর্শ গড় তাপমাত্রা হলো ২৫ সেঃ ও ফল পাকার সময় ২৮-৩০ সেঃ তাপমাত্রা।
তরমুজ ফলপাকার সময় আলোর অভাব হলে ফলের মিষ্টতা ও ঘ্রাণ খারাপ হয়। নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত যে কোন প্রকারের মাটিতে তরমুজের চাষ করলে ভালো ফলন হয়। তবে, উর্বর বেলে দোঁআশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য সবচেয়ে উত্তম।
তরমুজের জাত সমূহ
বর্তমানে তরমুজ চাষের জন্য বেশ কিছু উন্নতমানের তরমুজের জাত জাপান, তাইওয়ান, কোরিয়া সহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানী হচ্ছে। আর সে সমস্ত জাতের মধ্যে হাইব্রিড টপ ইন্ড গোরী, ওয়ার্ল্ড কুইন, বিটল, চ্যাম্পিয়ন, এম্পায়ার, ফিল্ড মাষ্টার, সুগারবেবী অন্যতম।
তবে এক সময় বাংলাদেশে পতেঙ্গা ও গোয়ালন্দ নামে তরমুজের দুটি জাতের চাষ বেশি করা হতো।
তরমুজের জীবন কাল
সাধারনত তরমুজের বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিন পর ফসল সংগ্রহ করা যায়।
তরমুজের বীজ বপনের সময়সূচী
সাধারণত তরমুজের বীজ বপনের সময় হলো শীতের শেষে ফেব্রুয়ারী মাসে। তবে বর্তমানে আগাম ফসল পেতে চাষিরা মধ্য নভেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারীর মধ্যে বীজ বপন করে থাকে।
আরোও জানতে পারেন – লবণ চাষ পদ্ধতি
তরমুজের বীজের হার
সাদারণত দুইভাবে বীজ বপন করা হয়। যেমনঃ
- যদি সরাসরি বীজ বপন করা হয় সেক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ১.৫ থেকে ২.০ কেজি আর শতাংশ প্রতি ৬-৮ গ্রাম বীজ প্রয়োজন।
- চারা করে রোপনের জন্য হেক্টর প্রতি ০.৮ থেকে ১.০ কেজি এবং শতাংশ প্রতি ৩ থেকে ৪ গ্রাম প্রয়োজন।
আরোও জানতে পারেন – শসা চাষ পদ্ধতি ও রোগ বালাই দমন ব্যবস্থাপনা
বীজের অংকুরোদগমন
বীজের অংকুরোদগমনের জন্য কমপক্ষে ২৫° সেঃ থেকে ৩০° সেঃ তাপমাত্রার প্রয়োজন। কিন্তু ১৫° সেঃ বা তার নিচের তাপমাত্রায় তরমুজের বীজ গজায়না। তাই শীতকালে খুব ঠান্ডা থাকলে বীজ ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে গোবরের মাদার ভিতরে বা মাটির পাত্রে বালি দিয়ে এর ভিতরে ঢুকিয়ে রেখে কিংবা চুলার উষ্ণতায় অথবা ভেজানো বীজ পলি ব্যাগে নিয়ে কারেন্টের বাল্বের কাছাকাছি ঝুলিয়ে রেখে দিলে ২-৩ দিনের মধ্যেই বীজ অংকুরিত হয়। বীজের অংকুর দেখা দিলেই বীজতলায় বীজ নিয়ে গিয়ে বপন করতে হয়।
আরোও জানুন – ফেব্রুয়ারী মাসের সবজি চাষ
তরমুজ উৎপাদন পদ্ধতি
দুই বাবে তরমুজ উৎপাদন করা যায়। যেমনঃ
- মাদায় সরাসরি বীজ বপন
- চারা তৈরী করে মাদাতে রোপণ
যদিও মাদায় সরাসরি বীজ বপন পদ্ধতি প্রচলিত থাকলেও চারা তৈরী করে মাদাতে রোপণ করাই উত্তম।
আরো পড়ুন – পাবদা মাছ চাষ পদ্ধতি
১) মাদায় সরাসরি তরমুজ বীজ বপন
এই পদ্ধতিতে প্রতি মাদায় ৪/৫ টি বীজ বপন করা হয়। ফলে বীজের খরচও হয় অনেক বেশী। আর শীতের সময় বীজ বপন করলে বীজ গজাতে চায়না। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় চারাগাছ ঠিকমত বাড়ে না এবং চারার পাতা কুঁকড়ে যায়। এতে আগাম চাষ ব্যহত হয়। চলুন জেনে নিই মাদায় বীজ বপন পদ্ধতি সম্পর্কে।
আরোও পড়তে পারেন – কমলা চাষ পদ্ধতি
- সরাসরি জমিতে বীজ বপনের জন্য বপনের ৮/১০ দিন আগে মাদা তৈরী করে মাটিতে সার মিশাতে হবে।
- দুই মিটার দূরে দূরে সারি করতে হবে।
- প্রতি সারিতে দুই মিটার দুরত্ব রেখে মাদা তৈরী করতে হবে।
- প্রতি মাদার প্রস্থ ৫০ সেঃ মিঃ ও গভীরতা ৫০ সেঃ মিঃ হতে হবে।
- মাটিতে বীজ বা চারা গজানোর পর শীতের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার জন্য পলিথিন ঠোঙা দিয়ে চারা ঢেকে রাখতে হবে।
- এরপর চারা গজানোর পর প্রতি মাদায় দুটি করে চারা রেখে বাকীগুলো তুলে ফেলতে হবে।
২) তরমুজ চারা তৈরী করে মাদাতে রোপণ
মাদায় সরাসরী বীজ বপণের চেয়ে তরমুজ চাষের জন্য চারা রোপণ করা উত্তম। তরমুজের বীজ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই বীজ বপনের চেয়ে চারা রোপণ করা উত্তম। এতে বীজের অপচয় কম হয়। তাই, চলুন জেনে নিই তরমুজ চারা তৈরী করে মাদাতে রোপণ পদ্ধতি সম্পর্কে।
- চারা তৈরীর জন্য ১০×১০ সে.মি. সাইজের পলিথিলিনের ব্যাগে ৫০/৫০ অনুপাতে বালি ও পচা গোবর
- মিশ্রিত মাটি ভর্তি করে প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ বপন করতে হবে।
- ৩০-৩৫ দিন বয়সের ৫-৬ পাতাবিশিষ্ট একটি চারা মাদায় রোপণ করতে হবে।
- চারা রোপনের জন্য জমিতে ৮- ১০ দিন আগে মাদা তৈরী করতে হবে এবং মাদায় সার প্রয়োগ করতে হবে।
- দুই মিটার দূরে দূরে সারি করতে হবে।
- প্রতি সারিতে দুই মিটার দুরত্ব রেখে মাদা তৈরী করতে হবে।
- উত্তরাঞ্চলে বেশি শীত বিধায় প্রয়োজন বোধে বীজ তালায় পলিথিনের ছাউনি দিয়ে এর নীচে চারা করে পরে শীত কমলে মাঠে রোপন করতে হবে। এতে তরমুজের চাষ ৪০-৪৫ দিন এগিয়ে যেতে পারে।
আরোও পড়ুন – তুলা চাষ পদ্ধতি
তরমুজ চাষের জমি তৈরী
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই মাদা তৈরী করে তরমুজ চাষ করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। মাদায় তরমুজের বীজ সরাসরি বপন বা চারা রোপনের আগে প্রয়োজন মত চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরী করতে হবে। জমি তৈরীর পর জমির দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি করে বেডের গ্রস্থ ২ মিটার এবং উচ্চতা কম পক্ষে ১৫ থেকে ২০ সেঃ মিঃ করতে হবে। বেডের কিনারা থেকে ৫০ সেঃ মিঃ বরাবর মাপার কেন্দ্র ধরে ২ মিঃ দূরে দূরে ৫০x৫০x৫০ সেঃ মিঃ সাইজের মাদা তৈরী করতে হবে। দুটি বেডের মাঝখানে ৫০ সেঃ মিঃ প্রস্থের নালা করতে হবে সেচ বা নিষ্কাশন করার জন্য।
আরোও জানতে পারেন – বিনাসয়াবিন চাষাবাদ পদ্ধতি
তরমুজ চাষে সার প্রয়োগের পরিমাণ
তরমুজ চাষে হেক্টর ও শতাংশ প্রতি সার প্রয়োগের পরিমাণ দেওয়া হলোঃ
সার | হেক্টর প্রতি | শতাংশ প্রতি |
গোবর/কম্পোষ্ট | ১০০০ কেজি | ৪০ কেজি |
ইউরিয়া | ২০০ কেজি | ৮০০ গ্রাম |
টিএসপি | ১৭৫ কেজি | ৭০০ গ্রাম |
এমপি | ২৫০ কেজি | ১ কেজি |
জিপসাম | ১০০ কেজি | ৪০০ গ্রাম |
জিঙ্ক | ১২ কেজি | ৫ গ্রাম |
বোরাক্স | ১০ কেজি | ৪০ গ্রাম |
প্রনিং বা ভালো মান সম্পন্ন তরমুজ পাওয়ার উপায়
তরমুজের সবগুলো শাখা রেখে দিলে গাছের অতিরিক্ত অঙ্গজ বৃদ্ধি হয় এবং শাখা-প্রশাখা গুলো পরস্পর জড়াজড়ি করে ফেলে। এর জন্য ফলন হ্রাস পায়। পাশাপাশি খাদ্য উপাদানের ঘাটতি হয়, রোগ বালাই ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বৃদ্ধি পায় এবং ফুল ও ফল ধরার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি হয়। আর এই সমস্যার সম্মুখীন না হওয়ার জন্য কিছু করনীয় রয়ছে, সেগুলো হলো-
- গাছে যখন ৮-১০টি পাতা হয় তখন কমপক্ষে ৫টি গিট রেখে প্রধান শাখার মাথা কেটে দিতে হবে।
- পরবর্তীতে প্রধান শাখার সাথে ৪ থেকে ৫ টি প্রশাখা রেখে বাকি প্রশাখা গুলো কেটে ফেলতে হবে।
- প্রতি প্রশাখায় ১ টি করে ফল রেখে অতিরিক্ত ফলগুলো ফেলে দিতে হবে।
এই নিয়ম গুলো মেনে চললে ভালো মান সম্পন্ন ফসল বা তরমুজ পাওয়া যাবে।
আরোও পড়তে পারেন – বিপন্ন প্রজাতির মহাশোল মাছ-এর প্রজনন ও চাষ ব্যবস্থাপনা
পরাগায়নের উপকারিতা
তরমুজ একটি পরাগায়িত উদ্ভিদ। তরমুজের গাছে পুরষ ও স্ত্রী দু রকমের ফুল হয়। স্ত্রী ও পুরুষ ফুল ফোটার পর বাতাস কিংবা পোকা মাকড় কর্তৃক বাহিত পরাগ দ্বারা স্ত্রী ফুল পরাগায়িত হয়। যে স্ত্রী ফুল স্বাভাবিকভাবে সম্পূর্ণ রূপে পরাগায়িত হয় না তা ঝড়ে যায়। এত করে ফলের আকার ভাল হয় না।
সকাল বেলা স্ত্রী ও পুরষ ফুল ফোটার সাথে সাথে স্ত্রী ফুলকে পুরষ ফুল দিয়ে পরাগায়িত করে দিলে ফুল ঝরে যায় না। এতে করে ফলের আকারও নষ্ট হয় না।
আরো পড়ুন – চিতল মাছের রেনু উৎপাদন ও চাষ পদ্ধতি
পরিচর্যা
- তরমুজ কিছুটা খরা সহ্য করতে পারে। তারপরও শুকনা মৌসুমে তরমুজ চাষের জন্য সেচ দেয়া খুবই প্রয়োজন। কিন্তু গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- তরমুজের গোড়ায় স্যাঁতস্যাতে অবস্থায় সহজেই পচা রোগ ধরতে পারে। এক্ষেত্রে মাটির উপর খড় বিছিয়ে দিলে ক্ষতির সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।
- তরমুজের ফল কত বড় হবে তা অনেকটা নির্ভর করে গাছে কি পরিমাণ ফলের সংখ্যা রয়েছে তার উপর। আর তাইা প্রতি গাছে ৩ থেকে ৪ টির বেশী ফল বা তরমুজ রাখা উচিৎ নয়। অতিরিক্ত সব ফল কচি অবস্থায় ফেলে দিতে হবে। এত ক্ষতির সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।
আরোও জানুন – লাভজনক উপায়ে মাছ চাষ পদ্ধতি
পোকা-মাকড় দমন ও রোগ-বালাই ব্যবস্থাপনা
অনেক সময় ফসলী জমিতে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় ও রোগবালাই আক্রমণ করে থাকে। এক্ষেত্রে চাষীরা যদি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই ক্ষতির সম্মুখীন না হওয়ার জন্য নিকটবর্তী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। নিম্নে কিছু পোকা-মাকড় দমন ও রোগ-বালাই ব্যবস্থাপনার নিয়ম-কানুন দেওয়া হলোঃ
আরোও জানুন – ছাদ বাগানে সবজি চাষ
(ক) জাব পোকার আক্রমণে করণীয়
এই জাব পোকা তরমুজ গাছের কচি কাণ্ড ডগা খেয়ে ও পাতার রস শুষে ফলের ও গাছের ক্ষতি করে।
তাই এই পোকা দমনের জন্য সুমিথিয়ন / ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি ২ মিলি/লিটার মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। তাহলে এই পোকার আক্রমণ থেকে তরমুজ গাছকে রক্ষা করতে পারবেন।
আরোও পড়ুন – পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
(খ) স্ত্রী বা মাজরা পোকার আক্রমণে করণীয়
স্ত্রী পোকা তরমুজের খোসার নিচে ডিম পাড়ে। আর ডিম ফুটে কীড়াগুলো বের হয়ে ফল বা তরমুজ খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। এতে ফলগুলো পচে যায়।
এই স্ত্রী বা মাজারা পোকা দমনের জন্য রিপকর্ড/ সুমিথিয়ন/ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি ১ মিলি/লিটার মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। এত করে সুফল পাওয়া যাবে।
আরোও জানতে পারেন – তিল চাষের সঠিক ও সহজ পদ্ধতি
(গ) কাণ্ড পচা রোগ
এই কাণ্ড পচা রোগের আক্রমণে তরমুজ গাছের গোড়ার কাছের কান্ড পচে যায় এবং গাছ মরে যায়।
তাই এর প্রতিকারের জন্য ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পর পর গাছে স্প্রে করতে হবে। এত উপকার পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুন – কচু চাষ পদ্ধতি
(ঘ) ফিউজেরিয়াম উইন্ট রোগ
এই ফিউজেরিয়াম উইন্ট রোগের আক্রমণে গাছ ঢলে পড়ে মারা যায়। যদি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করা থাকে এই রোগের প্রকোপ কম থাকে। যদি গাছ রোগাক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
এছাড়াও আরো অনেক পোকা-মাকড় ও রোগের আক্রমণে তরমুজ চাষে ক্ষতি হতে পারে। তাই যদি কোনো লক্ষণ দেখেন সেক্ষেত্রে দ্রুত নিকটবর্তী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
আরোও জানুন – বিলেতি ধনিয়া পাতার চাষ পদ্ধতি
তরমুজ ফসল সংগ্রহ
- সাধারণত জাত ভেদে ৯০ থেকে ১০০ দিন পর এই তরমুজ ফল সংগ্রহ করা যায়। তরমুজ সম্পূর্ণ পাকার পর বোটাসহ পাড়তে হয়।
- আঙ্গুল দিয়ে টোকা দিলে যদি ড্যাব ড্যাব শব্দ হয় তবে বুঝতে হবে যে ফল পরিপক্কতা লাভ করেছে। যদি ফল অপরিপক্ক হয় সেক্ষেত্রে শব্দ হবে অনেকটা ধাতবীয়।
- আর স্ত্রীফুল ফোটার ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ফল পাড়ার সময় হয়।
আরোও জানতে পারেন – গম চাষ পদ্ধতি
তরমুজের ফলন
ভালো ফসল উৎপাদন হলে হেক্টর প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টন বা শতাংশ প্রতি ১২০ থেকে ১৬০ কেজি ফলন পাওয়া যায়।
কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ, ফসলের চাষ পদ্ধতি, সার প্রয়োগ এবং ফসলের বিভিন্ন রোগ বালাই সম্পর্কে জানতে নিয়মিত ভিজিট করূন Krishakbd.com
FAQs
বর্তমানে সরবরাহ ভালো থাকায় পাইকারি হাটে বড় তরমুজ কেজিতে ৪০ টাকা ও ছোট তরমুজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে এই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি দামে। খুচরা বাজারে বিক্রেতারা প্রতি কেজি তরমুজের দাম দিচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
৫০০ গ্রাম তরমুজের বীজ এর মূল্য ৬৫০ টাকা এবং ১ কেজি তরমুজের বীজ এর মূল্য ১,৩০০ টাকা।