ইঁদুর মারার কেীশল | ইঁদুর তারানোর সহজ উপায়
ইঁদুর প্রায় ৬০টি রোগের জীবাণু বহন করে। অনেকে মনে করে ইঁদুর তারানো বা মারা খুব কঠিন কাজ। তাই চলুন জেনে আসি কিভাবে খুব সহজে ঘর থেকে ইঁদুর তারাবো বা মারবো।
ইঁদুর এমন একটি প্রাণী যেটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অতীষ্ট করে তুলেছে। প্রতিনিয়ত ইঁদুর আমাদের বসতবাড়ির মধ্যে থাকা শস্যদানা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-বইপত্র, কাপড়-চোপড়, খাবারের প্যাকেট, চামড়ার জিনিসপত্র, ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি কাটে ও খেয়ে ফেলে৷ এমনকি এই প্রাণী মাথার চুলকেও রেহাই দেয় না।
আরোও পড়তে পারেন – লাভজনক চাষাবাদ করতে জানুন নানা কৃষি যন্ত্রপাতি ও তার মূল্য সম্পর্কে
আর এই প্রানী অর্থাৎ ইঁদুর প্লেগ, টাইফয়েড, চর্মরোগ, কৃমিসহ মোট ৬০টি রোগের জীবাণু বহন করে। আর এই কারনে প্রতিনিয়ত আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। অনেকে মনে করে ঘর থেকে ইঁদুর তারানো বা ইঁদুর মারা কুব কঠিন কাজ। কিন্ত এই খুব একটা কঠিন নয়, শুধু ধৈর্য আর সময়ের প্রয়োজন। তাই চলুন জেনে আসি কিভাবে খুব সহজে ঘর থেকে ইঁদুর তারাবো বা মারবো।
গোল মরিচের সাহায্যে
ইঁদুরের বাসস্থানে গোল মরিচ রাখলে এই গোল মরিচের কটু গন্ধে ইঁদুর যখন শ্বাস নিবে তখন ইঁদুরের ফুসফুসে আঘাত লাগবে আর ইঁদুর মরবে। এছাড়াও গোলমরিচের গুঁড়া বাড়ির চারপাশে ছড়িয়ে রাখলে ইঁদুর ঘরের ধারেকাছেও আসবে না। অথবা গোলমরিচের গুড়ার বিপরীতে লালমরিচের গুঁড়া হতে পারে চমৎকার বিকল্প।
পেঁয়াজ ব্যবহার করে
পেঁয়াজের ঝাঁজালো গন্ধ ইঁদুর একদমই সহ্য করতে পারে না। আর তাই যেখানে ইঁদুরের আনাগোনা থাকে সেখানে পেঁয়াজ কেটে পেঁয়াজের গন্ধে ইঁদুর পালাবে।
লবঙ্গ ব্যবহার করে
ইঁদুরের আক্রমণ সেব জায়গায় বেশি এমন জায়গায় কয়েকটি লবঙ্গ কাপড়ে পেঁচিয়ে রেখে দিলে ইঁদুর খুব দ্রুতই পালাবে।
রসুনের সাহায্যে
রসুন কুচি করে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর সেই রসুন ভেজানো পানি ইঁদুরের রাস্তা বা বাসার আশেপাশে ছড়িয়ে দিলে ইদুর বাড়ির আমেপাশে আসবে না আর যেগুলো আছে সেগুলোও রসুনের গন্ধে পালাবে।
তেজপাতার ব্যবহার করে
তেজপাতা বা তেজপাতা গুঁড়া করে ইঁদুরের গর্তের মুখে বা ইঁদুর আসার রাস্তায় রেখে দিলে পাতার গন্ধে ইঁদুর পালাবে। আর ইঁদুর যদি কোনোভাবে তেজপাতায় জিভ লাগায় সাথে সাথে ইঁদুরের মৃত্যু নিশ্চিত।
পুদিনা পাতা বা এর তেল ব্যবহারের মাধ্যমে
ইঁদুর পুদিনার পাতা, পুদিনার তেল ও মেন্থলের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারে না। কারণ, পুদিনা পাতা হলো মেন্থল জাতীয়। তাই ঘরের প্রতিটা কোনা এবং ইঁদুর থাকার ও আসার জায়গাগুলোতে পুদিনা পাতা রেখে দেওয়া হয় ইঁদুর আর আসবে না।
ডিটারজেন্ট পাউডারের সাহায্যে
একটি পাত্রে ১০০ মিলি পানি, ২ কাপ তরল অ্যামোনিয়া, এবং ২ চা চামচ ডিটারজেন্ট পাউডার একসাথে মিশিয়ে ইঁদুরের গর্তে দিলে ইঁদুর মরে যাবে।
ট্যালকম পাউডার বা বেবি পাউডার ব্যবহার করে
প্রয়োজনমতো ট্যালকম বা বেবি পাউডার বাসার আশেপাশে ছিটিয়ে দিলে এটি ইঁদুরের জন্য বীষ হিসেবে কাজ করবে। বাড়ীর আশেপাশে আর ইঁদুর আসবেনা।
বেকিং পাউডার ব্যবহার করে
ঘরের আনাচে-কানাচে যেসব জায়গায় ইঁদুর বাসা বাঁধে সেসব জায়গায় রাতে ঘুমানোর আগে অনেকটা বেকিং পাউডার ছড়িয়ে দিলে ইঁদুর আর আসবে না।
ন্যাপথলিনের সাহায্যে
ন্যাপথলিন যদিও পোকামাকড়ের হাত থেকে কাপড়চোপড় বাঁচাতে ব্যবহার করা হয়। তবে এটা দিয়ে ইঁদুর নিধন করা যায়। ইঁদুরের বাসা ও আসা-যাওয়ার পথে কয়েকটা ন্যাপথলিন ফেলে রাখুলে ইঁদুর মরে যাবে।
চুল দিয়ে ইঁদুরের বিনাশ
চুল যদিও ইঁদুরের পছন্দের খাবার কিন্তু সেটা ইঁদুরের পেটে গেলে হজম হয় না আর ইঁদুর মরে যায়। তাই চিরুনি বা হেয়ারব্রাশে লেগে থাকা চুল ইঁদুরের গর্তে বা যেখানে ইঁদুর ঘুরঘুর করে সেখানে ফেলে রাখলে ইঁদুর চুল খেয়ে মরে যাবে।
বিড়াল পুষে
বিড়াল ইঁদুরের যম। তাই ঘরে বিড়াল পুষলে একটি ইঁদুরও পাওয়া যাবে না।
ইঁদুর মারতে গোবর
শুকনো গোবরের খন্ড টুকরো টুকরো করে ইঁদুরের আসার জায়গায় বা ইঁদুরের গর্তে রেখে দিলে ইঁদুর এই গোবর খেয়ে হজম করতে পারবেনা সাথে সাথে পেট খারাপ হবে আর ইঁদুর পেট ফুলে মারা যাবে।
ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখলে
সাধারণত ঘরের অন্ধকার, নোংরা জায়গা এবং ফার্নিচারের তলা ইত্যাদি ইঁদুরের পছন্দের জায়গা। আর তাই ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার মধ্য দিয়ে ইঁদুরের উপদ্রব কমানো সম্ভব।
এছাড়াও আরো অনেব উপায়ে ইঁদুর মারা সম্ভব। যেমনঃ ইঁদুর আসার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েও ইঁদুরের উপদ্রব কমানো সম্বব।
আরোও জানুন – ধানের শীষ মরা রোগে করণীয়
কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ, ফসলের চাষ পদ্ধতি, সার প্রয়োগ এবং ফসলের বিভিন্ন রোগ বালাই সম্পর্কে জানতে নিয়মিত ভিজিট করূন Krishakbd.com
FAQs
ইঁদুর আচর দিলে কামড়ালে আক্রান্ত স্থান থেকে রক্ত পড়ে, প্রচন্ড ব্যথা হয়, লাল হয়ে যায়, ফুলে যায়, চুলকানি, জ্বর, এবং মাথাব্যথা হয়। যদি ইনফেকশন হয় তাহলে অবস্থা আরো জটিল হতে পারে। অনেক সময় মানুসের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ইঁদুর মারার ঔষুধ বা বীষের নাম হলো জিঙ্ক ফসয়াইড। যা এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ।
ইঁদুর প্রায় ৬০টি রোগের জীবাণু বহন করে। ইঁদুর থেকে অনেক ধরনের জুনোটিক রোগ, নানা প্রকার চর্মরোগ, কৃমিরোগ, ইঁদুর কামড়ানো জ্বর,দ ও জন্ডিস রোগের জীবাণু সহ বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটে ইঁদুরের মলমূত্র, লোমের দ্বারা। এসব রোগের জীবাণু মাধ্যমে বিস্তার ঘটে।