ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি
ব্রোকলি একটি সুস্বাদু বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ ও ক্যান্সার প্রতিরোধক সবজি। তাই আসুন ব্রোকলি চাষের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই।
ব্রোকলি দেখতে ফুলকপির মতই, তবে রংটা সবুজ। এর বর্ণ সবুজ বলে অনেকেই এক সবুজ ফুল কপি বলে। চাইনিজ খাবারের ব্যবহৃত অন্যতম প্রধান উপকরণ এই সবজী।
বাংলাদেশের অধিকাংশ লোকের কাছে ব্রোকোলি এখনো তেমন পরিচিত নয়। চমৎকার এই সবজিটি এখন বাংলাদেশেই চাষ হচ্ছে এবং এটি দেশের চাইনিজ রেস্টুরেন্ট গুলোর চাহিদা মিটিয়ে এটি এখন দেশের বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে।
পুষ্টির দিক দিয়েও ব্রোকলি অনেক সমৃদ্ধ। ব্রোকলি ফুলকপির মত অত বড় হয় না। নিয়মিত ব্রোকলি খেলে তারুন্যতা বৃদ্ধি পায়।
এখন আমরা ব্রোকলি চাষের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।
ব্রোকলির জাত পরিচিতি
ব্রোকলি আমাদের দেশে নতুন সবজি। কাজেই এখন পর্যন্ত তেমন কোন ভাল জাত আমাদের দেশে নেই। উন্নত বিশ্বের বেশ কয়েকটি জাত যেমন- প্রিমিয়াম ক্রস, গ্রীন কমেট, জুপিটার প্রভৃতি জাতের ব্রোকলি চাষ করা যায়।
লালতীর সীডস লিমিটেড ‘লিডিয়া’ নামে ব্রোকলির একটি জাত বাজারজাত করছে, যা আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। জাতটি দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, তাপ সহিষ্ণু ও রোগ প্রতিরোধী, দেখতে আকর্ষণীয় ও খেতে সুস্বাদু।
ব্রোকলি চাষের সঠিক পদ্ধতি
বীজ বপনের সময়
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ব্রোকলি চাষের উত্তম সময় হল আশ্বিন থেকে পৌষ মাস।
বীজের হার
চারা রোপণের আগে বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) প্রায় ৫০ গ্রাম বীজ বপন করে বীজতলায় চারা তৈরি করতে হবে। এরপর মূল জমিতে চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ৬ হাজার চারা রোপণ করতে হবে।
রোপণ দূরত্ব
প্রায় ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ বয়সের চারা সারি থেকে সারি ২২ ইঞ্চি ও চারা থেকে চারা ১.৫ ফুট দূরত্বে রোপণ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝে ১ ফুট চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি গভীর নালা রাখতে হবে।
ব্রোকলি চাষে সার ব্যবস্থাপনা
ব্রোকলির ভাল ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতাংশ (ডেসিমাল) জমির জন্য নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।
সারের নাম | সারের পরিমাণ (হেক্টর প্রতি) |
গোবর | ১৫ হাজার কেজি |
ইউরিয়া | ২৫০ কেজি |
এমপি | ২০০ কেজি |
টিএসপি | ১৫০ কেজি |
পচা খৈল (প্রতি চারায়) | ৫০ গ্রাম |
ইউরিয়া সারের পরিমাণ বাড়ানোর সাথে সাথে ফলনও বাড়ে। জমি তৈরির সময় ও পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পরিমান জৈব সার ও রায়াসানিক সার প্রয়োগ করতে হবে।
জৈব সারের সাথে ইউরিয়া সার চারা রোপণের ১৫ দিন পর থেক দুই কিস্তিতে সমান ভাগ করে দিতে হবে।
ফসল সংগ্রহ
সঠিকমানের জৈব হরমোন ব্যবহার করলে প্রায় ১০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। প্রায় তিন ইঞ্চি কাণ্ডসহ ধারালো ছুরি দিয়ে ফুল কেটে সংগ্রহ করতে হয়। এর ১০ থেকে ১২ দিন পর পর্যায়ক্রমে বোঁটাসহ কক্ষীয় প্রোপুষ্পমঞ্জুরী সংগ্রহ করতে হয়।
ফলন
সঠিক পরিচর্যা করলে বিঘাপ্রতি ৫০-৬৫ মণ ফলন পাওয়া যায়।