বারোমাসি আম চাষ করে বারমাসি আয়
আম একটি অত্যন্ত সুস্বাদু ফল। আমের ব্যাপক চাহিদার রয়েছে। ফলে আম চাষ অত্যন্ত লাভজনক। তাই আসুন আমে চাষের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই।
আম হল ফলের রাজা। পুষ্টি,স্বাদ বা গন্ধে বর্ণে অতুলনীয় আম নামক ফলটির জুড়ি মেলা ভার। সময়ের সাথে সাথে এই ফলটি হয়ে উঠেছে অধিকতর চাহিদা সম্পন্ন।
অপ্রতিদ্বন্দ্বী এরপর শুধুমাত্র বাড়ির আঙ্গিনায় নয় বরং ফুল বাগানের শোভা বর্ধনের জন্য সজ্জিত মিয়াজিক বা বারোমাসি কাটিমনই যথেষ্ট। প্রায় সব ধরনের মাটিতে আম ভালো জন্মে, তবে পার্বত্য অঞ্চল আগাম জাতের আমের জন্য ভালো।
বারোমাস আমের জাত
মে মাসেই আমের আগাম জাত চৈতি, বৈশাখী, সুড়ৎ বোম্বাই, গোলাপখাস, গোবিন্দভোগ, লক্ষণভোগ জাতের আম ফল পাকতে থাকে।
চৈতি: চৈতি আগাম জাতের আম বলে বাজারে আমি বেশ চাহিদা থাকে।
বৈশাখী: আমের আরেকটি আশু জাত বৈশাখী। বৈশাখ মাসে পাকে বলেই এ আমের নামকরণ করা হয়েছে বৈশাখী। পাতলা আঁটির আঁশহীন, সুস্বাদু ও জাতটির শেল্ফ লাইফ তুলনামূলকভাবে বেশি। মাঝারি আকারে এ আমগুলোর চার থেকে পাঁচটি (১ কেজি ) হয়ে থাকে।
সুড়ৎ বোম্বাই: আরেকটি আগাম জাত সুড়ৎ বোম্বাই জাতটি আকারে ছোট হলেও আঁটি এ পাতলা হওয়ার ভক্ষণশীল অংশের পরিমাণ বেশি। শ্বাস কমলা বর্ণের সুগন্ধি ও আঁশহীন।
গোলাপখাস: গোলাপখাস পাকা আম থেকে গোলাপ ফুলের ন্যায় গন্ধ পাওয়া যায় বলে এ জাতটির নাম গোলাপখাস। মাঝারি আকৃতির গোলাপখাস জাতের আম কিছুটা লম্বাকৃতি। অতি আগাম জাত হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশ। পাকা ফল দেখতে সুন্দর কিন্তু স্বাদে সামান্য টক-মিষ্টি।
গোবিন্দভোগ: গোবিন্দভোগ জাতটি বাংলাদেশে প্রাপ্ত আগাম আশু জাতের আমের মাঝে উল্লেখ করার মত মিষ্টি। উৎকৃষ্ট জাতের এ আম সাতক্ষীরা ও যশোর জেলায় সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয়ে থাকে। এ আম মে মাসের শুরুর দিকে পরিপক্ব হতে এবং মাঝামাঝিতে পাকতে শুরু করে।
লক্ষণভোগ: লখনা নামেও এ জাত বেশ সমাদৃত। প্রতি বছরই ফল দিতে সক্ষম বলে লক্ষণভোগ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন উপযোগী জাত। ফলের আকৃতি উপবৃত্তাকার। চামড়া পুরু হলেও আঁটি পাতলা, স্বাদ,সুগন্ধে অতুলনীয় অগ্রিম এ আমের জাতের বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাযইনবাবগঞ্জে এ জাত বেশি জন্মে থাকে।
গৃষ্মকালীন সময়ে পাকা-কাঁচা ফলের সমাহারে বাংলার প্রকৃতি সুশোভিত হয়ে ওঠে। এ সময়কালে উল্লেখ করার মত আমের জাত গুলোর মাঝে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে ল্যাংড়া, আম্রপালি, হিমসাগর, ব্যানানা ম্যাংগো, হাঁড়িভাঙ্গা, গোলাপভোগ, রাণীপছন্দ আম।
ল্যাংড়া আম: কথিত আছে, পায়ে সমস্যাগ্রস্ত এক ফকিরবাবা প্রথম ল্যাংড়া আমের চাষ শুরু করেন বলে এ জাতটি এমন অদ্ভুত নামের অধিকারী। মাঝারি আকৃতির এ ফলের স্বাদ অতুলনীয়। ডিম্বাকার- গোলাকৃতির কাঁচা আমের গন্ধও আকর্ষণীয়। শাঁস রসাল, সুগন্ধযুক্ত, ছোটো আটির উৎকৃষ্ট এ জাত আমাদের দেশে অতি জনপ্রিয়।
ফজলি আম: রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়ায় প্রচুর পরিমাণে ফজলি আম জন্মে। গড় ওজন ৬১০ হলেও এর ওজন ১ কেজিও হয়ে থাকে। হলুদ শাঁস,আঁশহীন,রসাল, সুস্বাদু এ আমের আঁটি লম্বা, চ্যাপ্টা, পাতলা। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফজলি আম পাকা শুরু হয়।
হাঁড়িভাঙ্গা আম: বাংলাদেশের অতি পরিচিত ও সারা বিশ্বে সমাদৃত আমের জাত হাড়িভাঙ্গা। এ নামের উৎপত্তি রংপুর জেলায়। গাছের ডালপালা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশি বিস্তৃত হয়। ফলে ঝড়ো বাতাসে গাছ উপড়ে পড়ে না এবং তুলনামূলকভাবে কম ঝরে।
হিমসাগর আম: হিমসাগর পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত আম হলেও আঁশহীন, মিষ্টি স্বাদ ও গন্ধে জন্য সারা পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে। জুন মাসের শেষে এ আম বাজারে আসে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরা জেলায় এ আমের বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে।
আম্রপালি আম: আম্রপালি জাতটি সত্তরের দশকে ‘দশোরি ও ‘নিলম’ জাতের সংকরায়নে ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তিক উদ্ভাবিত হয়। বর্তমানে উৎপাদিত আমের ৩০ ভাগই আম্রপালি।গাছের গঠন ছোট, এর মিষ্টতা ল্যাংড়া বা হিমসাগর হতে বেশি। এ ফল পাকলে গাঢ় কমলা-লাল ধারণ করে, ভিটামিন ‘এ’ এর পরিমাণ বেশি।
ব্যানানা ম্যাংগো: দিনকে দিন বিদেশী যে কয় জাতের আমের গ্রহণযোগ্যতা চোখে পড়ার মত তার মাঝে ব্যানানা ম্যাংগো একটি। বাণিজ্যিকভাবে পাহাড়ি অঞ্চলে ও আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও বাড়ির আঙিনা বাগানে কল আসল উদ্দেশ্য বাগানের জন্য শোভাবর্ধক।
গোলাপভোগ আম: গোলাপভোগ আমের জাতটি খুব অল্প সময়ে বাজারে পাওয়া যায়। এ জাতটি দেশের প্রায় সব জেলাতেই জন্মে। আমের খোসা মোটা তবে আটি পাতলা হয়ে থাকে। গোলাকৃতি এ আম কাঁচা অবস্থায় সবুজ, পাকলে হলুদ- লালচে রঙের হয়। আমের রাজা ল্যাংড়া আমের পরেই এই জাতের অবস্থান।
নাবিজাতের বারি আম-৪: নাবি এ জাতটি উচ্চফলনশীল যা সারাদেশে চাষ হয়ে থাকে। বাজারে নাবি জাতের আমের মাঝে অন্যতম স্থানের অধিকারী গৌড়মতি আম।বাংলার প্রাচীন জনপদ ‘গৌড়’ ও মূল্য বিবেচনায় যা একত্রে গৌড়মতি।
বারোমাসি আমের জমি তৈরি
সাধারণত দোআঁশ মাটি ও মাঝারি উঁচু জমি বারোমাসি আম চাষের জন্য উপযোগী।
আম পাকার সময়
নভেম্বর, ফেব্রুয়ারি ও মে মাসে মুকুল আসে এবং মার্চ-এপ্রিল, মে-জুন ও জুলাই-আগস্ট আম পাকে এবং সংগ্রহের উপযোগী হয়।
বারোমাসি আমের রোগবালাই
১) এনথ্রাকনোজ – এই রোগের আক্রমণে গাছের কচি পাতা, কাণ্ড, কুঁড়ি, মুকুল ও ফলে দেখা যায়। পাতায় অসমান আকৃতির ধূসর বাদামি বা কালচে রঙের দাগ পড়ে। পাশাপাশি কয়েকটি দাগ একত্রিত হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে।
বেশি আক্রান্ত হলে পাতা ঝরে পড়ে। আমের মুকুল বা ফুল আক্রান্ত হলে কালো দাগ দেখা দেয়। ফুল আক্রান্ত হলে তা মারা যায় এবং ঝরে পড়ে। মুকুল আক্রান্ত হলে ফলধারণ ব্যাহত হয়। আম ছোট অবস্থায় আক্রান্ত হলে আমের গায়ে কালো দাগ দেখা দেয়।
আক্রান্ত ছোট আম ঝরে পড়ে। বাড়ন্ত আমে রোগের জীবাণু আক্রমণ হলে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। পাকা আমে ধূসর বাদামি বা কালো দাগের সৃষ্টি করে।
গুদামের আবহাওয়া অনুকূল হলে রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে। আম বড় হওয়ার সময় ঘন ঘন বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়া বিরাজ করলে আমে আক্রমণ বেশি দেখা যায়।
প্রতিকার – রোগাক্রান্ত বা মরা ডালপালা ছাঁটাই করে পুড়ে ফেলতে হবে। গাছের রোগাক্রান্ত ঝরা পাতা ও ঝরে পড়া আম সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে, প্রয়োজনে মাটির নিচে পুঁতে দিতে হবে।
মুকুলে রোগের আক্রমণ প্রতিহত করতে হলে মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। মুকুল ১০-১৫ সেমি. লম্বা হলে প্রথম স্প্র্রে শেষ করতে হবে।
আম মটর দানার মতো হলে দ্বিতীয় বার স্প্রে করতে হবে। কীটনাশকের এবং ছত্রাকনাশক মিশিয়ে একত্রে মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। বাড়ন্ত আমকে রোগমুক্ত রাখতে হলে আম সংগ্রহের ১৫ দিন আগ পর্যন্ত মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক বা একরোবেট এম জেড প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে বা ব্যভিস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে ১৫ দিনের ব্যবধানে ৩/৪ বার স্প্রে করতে হবে।
গাছ থেকে আম পাড়ার পরপরই গরম পানিতে (৫৫০ সে. তাপমাত্রায় ৫ মিনিট) ডুবিয়ে রাখার পর শুকিয়ে অর্থাৎ গরম পানিতে শোধন করে গুদামজাত করতে হবে।
২) বোঁটা পচা – আম গাছ থেকে পাড়ার পর পাকতে শুরু করলে বোঁটা পচা রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। প্রথমে বোঁটায় বাদামি অথবা কালো দাগ দেখা দেয়। দাগ দ্রুত বাড়তে থাকে এবং গোলাকার হয়ে বোঁটার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
জীবাণু ফলের ভেতরে আক্রমণ করে পচিয়ে ফেলে। আক্রান্ত আম ২/৩ দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। রোগের জীবাণু বোঁটা ছাড়াও অন্যান্য আঘাতপ্রাপ্ত স্থান দিয়ে আমের ভেতরে প্রবেশ করে আম পচিয়ে ফেলতে দেখা যায়।
প্রতিকার – রোদ্রোজ্জ্বল দিনে গাছ থেকে আম পাড়তে হবে। আম পাড়ার সময় যাতে আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ৫ সেমি. (২ ইঞ্চি) বোঁটাসহ আম পাড়লে এ রোগের আক্রমণ কমে যায়।
আম পাড়ার পর গাছের তলায় জমা না রেখে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। আম পাড়ার পর পরই গরম পানিতে (৫৫০ সে. তাপমাত্রার পানিতে ৫-৭ মিনিট) অথবা বাভিস্টিন দ্রবণে (প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম) ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখার পর গুদামজাত করলে বোঁটা পচা রোগের আক্রমণ অনেকাংশে কমে যায়।
৩) আমের আঠা ঝরা এবং হঠাৎ মড়ক – বর্তমানে আম গাছের যেসব রোগ দেখা যায় তাদের মধ্যে আমের আঠা ঝরা এবং হঠাৎ মড়ক সবচেয়ে মারাত্মক। কারণ এ রোগে আক্রান্ত গাছ খুব অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায় ।
প্রথমে কা- অথবা মোটা ডালের কিছু কিছু জায়গা থেকে হালকা বাদামি থেকে গাড় বাদামি রঙের আঠা বা রস বের হতে থাকে। বেশি আক্রান্ত ডগা বা ডালটি অল্প দিনের মধ্যেই মারা যায়। কিছুদিন পর দেখা যায় আরেকটি ডাল একইভাবে মারা যাচ্ছে। এভাবে এক পর্যায়ে সম্পূর্ণ গাছ মারা যেতে পারে।
প্রতিকার – গাছে মরা বা ঘন ডাল পালা থাকলে তা নিয়মিত ছাঁটাই করতে হবে। আঠা বা রস বের হওয়ার স্থানের আক্রান্ত সহ সুস্থ কিছু অংশ তুলে ফেলে সেখানে বোর্দোপেস্টের (১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০ গ্রাম চুন ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করা যায়) প্রলেপ দিতে হবে।
আক্রান্ত ডাল কিছু সুস্থ অংশসহ কেটে পুড়ে ফেলতে হবে। কাটা অংশে রোগের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বোর্দোপেস্টের প্রলেপ দিতে হবে। গাছে নতুন পাতা বের হলে মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ১৫ দিনের ব্যবধানে ২ বার স্প্রে করতে হবে।
৪) আগামরা – এ রোগের জীবাণু প্রথমে কচি পাতায় আক্রমণ করে। আক্রান্ত পাতা বাদামি হয় এবং পাতার কিনারা মুড়িয়ে যায়। পাতাটি তাড়াতাড়ি মারা যায় ও শুকিয়ে যায়। আক্রমণ পাতা থেকে এ রোগের জীবাণু কুড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ডগার সামনের দিকে মরে যায়।
মরা অংশ নিচের দিকে অগ্রসর হতে থাকে ফলে বহু দূর থেকে আগামরা রোগের লক্ষণ বোঝা যায়। ডগাটি লম্বালম্বিভাবে কাটলে বাদামি লম্বা দাগের সৃষ্টি করে। আক্রমণ বেশি হলে গাছ মারা যেতে পারে।
প্রতিকার – আক্রান্ত ডাল কিছু সুস্থ অংশসহ কেটে ফেলতে হবে। কাটা অংশ পুড়াই ফেললে ভালো। কাটা অংশে বোর্দোপেস্টের (১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০ গ্রাম চুন ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করা যায়) প্রলেপ দিতে হবে।
গাছে নতুন পাতা বের হলে মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন- ডায়থেন এম ৪৫/ পেনকোজেব/ ইন্ডোফিল ইত্যাদি (প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে) ১৫ দিনের ব্যবধানে ২/৩ বার স্প্রে করতে হবে।
৫) কাল প্রান্ত – ইটের ভাটা থেকে নির্গত ধোয়ায় কারণে এ রোগ হতে পারে। আমের বয়স দেড় মাস হলে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। আক্রান্ত আমের বোঁটার দিকের অংশ স্বাভাবিকভাবে বাড়লেও নিচের অংশ ঠিক মতো বাড়তে পারে না।
ফলে আমের গঠন বিকৃত হয়। নিচের অংশ কুঁচকে যায়, বেশি আক্রান্ত আমের নিচের অংশ কাল হয়ে যায়। কোনো কোনো সময় আমের বিকৃত অংশ ফেটে যেতে পারে এবং পচে যেতে পারে।
প্রতিকার – আম মার্বেল আকারের হলে প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম বোরাক্স বা বোরিক পাউডার ১০-১৫ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে। ইটের ভাটা আম বাগান থেকে ২ কিমি. দূরে স্থাপন করতে হবে। ইটের ভাটার চিমনি কমপক্ষে ৩৭ মিটার (১২০ ফুট) উঁচু করতে হবে।
৬) আম ফেটে যাওয়া – আম ছাড়াও কাঁঠাল, ডালিম, পেয়ারা ইত্যাদি ফল ফেটে যেতে দেখা যায়। সব ধরনের ফল ফাটার কারণ মোটামুটিভাবে একই। মাটিতে রসের দ্রুত হ্রাস-বৃদ্ধি আম ফাটার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত।
আবহাওয়া শুকনা হলে এবং দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাত না হলে আমের ওপরের খোসা শক্ত হয়ে যায়। এরপর হঠাৎ বৃষ্টিপাত হলে বা সেচ প্রদান করলে আম দ্রুত বাড়তে শুরু করে।
আমের ভেতরের দিক ঠিকমতো বাড়লেও বাহিরের আবরণ শক্ত হওয়ার কারণে তা বাড়তে পারে না। এ অবস্থায় আম ফেটে যায়। মাটিতে বোরণের ঘাটতি থাকলেও আম ফাটতে সহায়তা করে বলে জানা যায়।
প্রতিকার – মাটিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার দিতে হবে। জৈব সার মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে ফলে শুকনা বা খরার সময়ও মাটিতে যথেষ্ট রস থাকবে।জৈব সারের মধ্যে গোবর সব চেয়ে উত্তম বলে বিবেচিত। সার দেয়ার মৌসুমে ২০ বছর বা তদূর্ধ্ববয়সের গাছে ৫০ গ্রাম বোরাক্স বা বোরিক এসিড প্রয়োগ করতে হবে।