বাঁধাকপি চাষ পদ্ধতি
বাঁধাকপি একটি শীতকালীন সবজি যা চাষ করতে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় তাই আসুন জেনে নিই বাঁধাকপি চাষের সঠিক পদ্ধতি

বাঁধাকপি একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি। এতে প্রচুর ক্যারোটিন রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বেশ উপকারী। আমাদের দেশে শীতকালে একটি ভাল জন্মে। আজকাল গ্রীষ্মকালেও এর চাষ করা হচ্ছে।
আরোও পড়ুন – ফুলকপি চাষ পদ্ধতি
মাটি
এঁটেল দোআঁশ মাটি এর জন্য সবচেয়ে উপযোগী তবে উর্বর দোআঁশ মাটিতেও জন্মে।
সময়
বীজ বপন শীতকালীন ফসলের জন্য ভাদ্র থেকে আশ্বিন গ্রীষ্মকালে ফাল্গুন থেকে চৈত্র মাসে বীজ বপন করার উপযুক্ত সময়।
জাত
প্রভাতী, এ্যাটলাস – ৭০, কেওয়াই ক্রস, কে.কে. ক্রস উল্লেখযোগ্য। আগাম চাষের জন্য প্রভাতী জাত উপযোগী।
এ জাত থেকে বীজ উৎপাদন করা যায়। কে. কে. ক্রস, লিও – ৮০ গ্রীষ্মেও আবাদ করা যায়। এছাড়া হাইব্রিড জাতও আছে।
আরোও পড়তে পারেন – ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি
বীজের হার
এক শতকে | একর প্রতি | হেক্টর প্রতি |
১.৫ গ্রাম | ১৪২-১৬২ গ্রাম | ৩৫০ – ৪০০ গ্রাম |
চারা উৎপাদন
বীজতলায় ঘন করে বীন বোনা হয়। বীজ গজানোর ১০থেকে ১২ দিন পর চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করে এক মাস বয়সি চারা লাগালে ফলন বেড়ে যায়।
জমি তৈরি
চার থেকে পাঁচটি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হবে।
আরোও পড়ুন – আলু চাষ পদ্ধতি
সারের পরিমাণ
বাঁধাকপি সার বেশি খায় বলে একে রাক্ষুসী ফল বলা হয়। ভালো ফলন পেতে হলে কম উর্বর জমিতে নির্ম্নরূপ হারে সার ব্যবহার করতে হবে।
সারের নাম সমূহ
সারের নাম | এক শতকে | একর প্রতি | হেক্টর প্রতি |
গোবর | ২০ – ৪০ কেজি | ২ – ৪ টন | ৫ – ১০ টন |
ইউরিয়া | ১.৫ কেজি | ১৫২ কেজি | ৩৭৫ কেজি |
টিএসপি | ৯০০ গ্রাম | ৯১ কেজি | ২২৫ কেজি |
মি: অব পটাশ | ১ কেজি | ১০০ কেজি | ২৫০ কেজি |
সার ব্যবহারের নিয়ম
জমি তৈরির সময় গোবর ও টিএসপির অর্ধেক এবং ইউরিয়া ও পটাশ ব্যতীত অন্যান্য সারের সবটা ক্ষেতের মাটির সাথে মিশতে হবে।
চারা রোপণের সময় সারির নিচে বাকী গোবর ও টিএসপি এবং ইউরিয়ার তিন ভাগের এক ভাগ ও অর্ধেক মিউ: অব পটাশ প্রয়োগ করতে হবে।
বাকী ইউরিয়া ও পটাশ সার দুইভাগ করে বন্ধনী পদ্ধতিতে একভাগ চারা রোপণের ২০দিন পর ও অপর ৩৫ দিন পর দিতে হবে।
আরোও পড়ুন – সরিষার চাষ পদ্ধতি
চারা রোপণ
বীজ গজানোর ১০ থেকে ১২ দিন পর গজানো চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করতে হয়। চারায় ৫ অথবা ৬ টি পাতা হলে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের চারা লাগাতে হয়।
দূরত্ব সারি থেকে সারি ৬০ সেন্টিমিটার বা ২ ফুট, চারা থেকে চারা ৪৫ সেন্টিমিটার বা ১.৫ ফুট।
দূরত্ব
সারি থেকে সারি ৬০ সে:সি: বা ২ ফুট, চারা থেকে চারা ৪৫ সে:মি: বা ১.৫ ফুট।
সেচ
চারা লাগানোর পর পানি দিতে হবে। এরপর মাটিতে রসের অবস্থা বুঝে মাঝেমধ্যে সেচ দিতে হবে।
পরিচর্যা
গাছ বড় হবার সাথে সাথে দুসারির মাঝখানে থেকে মাটি তুলে সারি বরাবর আইলের মতো করে দিলে বাঁধাকপি বড় হয়। এতে নালা দিয়ে সার্চ দিতে অসুবিধা হয়।
আরোও পড়তে পারেন – গাজর চাষ পদ্ধতি
বাঁধাকপির ক্ষতিকর পোকামাকড় ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা
১. পাতা খেকো লেদা পোকা
সাইপারমেথ্রিন ১ মিলি বা ক্যারাটে ১ মিলি বা করলাক্স ৩ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২. বাঁধাকপির কাটুই পোকা
দানাদার বালাইনাশক বাসুডিন ১০ জি ১৬.৮ কেজি /হে: বা কার্বোফুরান ৫ জি. ১০ কেজি/হে: বা ডার্সবান বা লর্সবান ২.৫ – ৫ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ
রোপণের সাড়ে তিন মাসের মধ্যে বাঁধাকপি খাওয়ার উপযুক্ত হয়। পাতা বাঁধার জন্য ইট চাপা দেয়া উচিত নয়।
ফলন
এক শতকে | একর প্রতি | হেক্টর প্রতি |
২৮০ – ৪০০ কেজি | ২৮ – ৪০ টন | ৭০ – ১০০ টন |