ক্যাপসিকাম চাষের সঠিক পদ্ধতি ও পোকামাকড় দমন

রান্নায় ক্যাপসিকামের ব্যবহারে রান্নার স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তাই ক্যাপসিকামের চাহিদা ওদাম দিনে দিনে বাড়ছে। চলুন জানি ক্যাপসিকাম চাষ সম্পর্কে।

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি

ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি হলো ঝুরঝুরে বেলে দোআঁশ মাটি। কারণ এই মাটিতে ক্যাপসিকামের ভালো ফলন হয় এবং ক্যাপসিকাম একটি জনপ্রিয় সবজি। যদিও সব মৌসুমেই ক্যাপসিকাম চাষ সম্ভব তারপরও ভাদ্র ও মাঘ মাসে ক্যাপসিকামের বীজ বপন করলে ফসল ভালো হয়।

আর বাজারে ক্যাপসিকামের ভালো চাহিদা ও দাম রয়েছে। তাই কৃষকরাও এই ক্যাপসিকাম চাষে মনযোগী হচ্ছেন। তাই চলুন ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানি।

ক্যাপসিকাম সম্পর্কে কিছু তথ্য

ক্যাপসিকাম এর উপকারিতা হলো এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি প্রচুর পরিমাণে থাকে। ক্যাপসিকামের আকার-আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। সাধারণত ক্যাপসিকাম গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়।

এটি আমাদের দেশে প্রচলিত সবজি না হলেও সম্প্রতি এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে টমেটোর পরেই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাম। 

ক্যাপসিকাম চাষের সময়

ক্যাপসিকামের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। তবে বর্তমানে ঘরোয়া পরিবেশে কৃষকরা বারো মাসে এই ক্যাপসিকাম চাষের চেষ্টা করে। ক্যাপসিকাম উৎপাদানের সময়১৬০ থেকে ২৫০ সে. তাপমাত্রা ও সবচেয়ে উপযোগী।

আরও পড়ুন- আধুনিকভাবে রেডলেডি পেঁপে চাষ পদ্ধতি

ক্যাপসিকামের জাত

  • California Wonder
  • Tender Bell (F1)
  • Yellow Wonder

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি

  • ক্যাপসিকাম থেকে বীজ সংগ্রহ করতে চাইলে পরিপক্ব ক্যাপসিকাম থেকে সংগ্রহ করতে হবে। বীজগুলি বপন করতে গভীরতা কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি হতে হবে। 
  • বীজ দিয়ে চাষ করতে চাইলে বীজ থেকে প্রথমে চারা তৈরি করে নিতে হয়। প্রতি শতকের জন্য এক গ্রাম বীজ দরকার হয়।
  •  বীজগুলোকে ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে আগে থেকে তৈরী করে রাখা বীজতলায় ১০ সেন্টিমিটার  দূরে দূরে লাইনে করে বীজ লাগাতে হবে। বীজ গজাতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগে।

আরোও পড়ুন – মরিচ চাষ পদ্ধতি

ক্যাপসিকাম গাছে সার প্রয়োগ

ক্যাপসিকাম গাছে গোবর ৪০ কেজি ,ইউরিয়া ১ কেজি টিএসপি ১.৪ কেজি , এমপি ১ কেজি, জিপসাম ৪৫০ গ্রাম এবং জিংক অক্সাইড ২০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। 

ক্যাপসিকাম গাছের পরিচর্যা

  1. ক্যাপসিকাম  অঙ্কুরোদগমের আগে গাছটিকে কম সূর্যালোকে রাখতে হবে। এরপর অঙ্কেরোদগম হওয়ার পরে গাছটিকে সূর্যালোকে রাখতে হবে।
  2.  তবে এই গাছটি প্রখর সূর্যের আলো যেন না পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। ক্যাপসিকাম এর গাছ বৃদ্ধি পেতে প্রায়৪৫ থেকে৬০দিন সময় লাগে। গাছের চারা লাগানোর জন্য বেড তৈরি করতে হবে।
  3. প্রতি বেড প্রস্থে ৭৫ সেন্টিমিটার হতে হবে এবং লম্বাই দুটি  সারিতে ২০ টি চারা সংকলনের জন্য ৯ মিটার ব্যাট হবে।

আরোও পড়তে পারেন – তিল চাষ পদ্ধতি

ক্যাপসিকাম গাছের পোকামাকড় দমন ব্যাবস্থাপণা

ক্যাপসিকামের রোগ গুলো

  • জাবপোকা পোকা 
  • থ্রিপস পোকা
  • লালমাকড় 
  • এ্যানথ্রাকনোস রোগ
  • ব্লাইট রোগ ইত্যাদি
  • এছাড়াও ক্যাপসিকাম গাছে পোকার আক্রমণ হলে ১ মচা-চামচ সাবান গুঁড়া এবং১ টেবিল-চামচ ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি সপ্তাহে একবার স্প্রে করতে হবে।
  • প্রতি সপ্তাহ অন্তর ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম কমপেনিয়ন ও ইমিটাফ ২০ এসএল ১ মিলিগ্রাম একসাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
  • অথবা, অটোস্টিন ১ মিলিগ্রামের সাথে টাফগর ২ মিলিগ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করুন।

FAQs

ক্যাপসিকাম চাষ কিভাবে করতে হয়?

মাটির প্রায় ৫ মিলিমিটার গভীরে ক্যাপসিকামের বীজ বপন করে এবং নিয়মিত জল দিয়ে ক্যাপসিকাম চাষ করতে হয়।

বীজ থেকে ক্যাপসিকাম চাষ করতে কতদিন লাগে?

বীজ থেকে ক্যাপসিকাম চাষ করতে ৮-১২ মাস সময় লাগে।

লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম চাষ কিভাবে করতে হয়?

লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম চাষ করতে হয় একসাথে একই জমিতে বা একই পাত্রে লাল ও ক্যাপসিকামের বীজ বপন করে।

ক্যাপসিকাম কি মরিচ?

হ্যাঁ ক্যাপসিকাম একধরণের মরিচ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *