ফুলকপি চাষ পদ্ধতি
ফুলকপি একটি শীতকালীন সবজি যা চাষ করতে কিছু পদ্বতি অবলম্বন করতে হয় তাই আসুন জেনে নিই ফুলকপি চাষের সঠিক পদ্ধতি
ফুলকপি একটি উৎকৃষ্ট উপাদেয় সবজি। আমাদের দেশে শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ব্যাপক আকারে এর চাষ করা হয়। জীবনকাল ৯৫-১০৫ দিন।
আসুন আমরা ফুলকপি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই।
মাটি
উর্বর দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
আরোও পড়ুন – বাঁধাকপি চাষ পদ্ধতি
ফুলকপি চাষের সময় ও জাত
১. আশু জাত
অগ্রহায়নী, আর্লী পাটনা, আর্লী স্নোবল,সুপার স্নোবল, ট্রপিক্যাল স্নো-৫৫ ও হাইব্রিড জাত। শ্রাবন-ভাদ্র মাসে বীজ বুনতে হয়।
২. মধ্যম জাত
পৌষালী, রাক্ষুসী স্নোবল এক্স,স্নোবল ওয়াই, স্নোড্রিফট ও হোয়াইট টপ।
ভাদ্র-আশ্বিন মাসে বীজ বোনার সময়।
৩. নাবী জাত
মাঘী বেনারসী, ইউনিক স্নোবল,হোয়াইট মাউন্টেন, এরফার্ট,ক্রিস্টমাস ও হাইব্রিড জাত। আশ্বিন-কার্তিক মাসে বীজ বোনার সময়।
ফুলকপি চাষ পদ্ধতি
আরোও পড়তে পারেন – মূলা চাষ পদ্ধতি
জমি তৈরি
৪-৫ টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হয়।
বীজের হার
এক শতকে | একর প্রতি | হেক্টর প্রতি |
২-২.৫ গ্রাম | ১৮০-২৪০ গ্রাম | ৪৫০-৬০০ গ্রাম |
সারের পরিমাণ
সারের নাম | এক শতকে | একর প্রতি | হেক্টর প্রতি |
গোবর | ১৬ কেজি | ১৬০০ কেজি | ৪ টন |
ইউরিয়া | ৯০০ গ্রাম | ৯০ কেজি | ২২০ কেজি |
টিএসপি | ৫০০ গ্রাম | ৫২ কেজি | ১৩০ কেজি |
মিউ:অব পটাশ | ৫০০ গ্রাম (প্রায়) | ৫৫ কেজি | ১৩৫ কেজি |
জিপসাম | ৭৩০ গ্রাম | ৭৩ কেজি | ১৮০ কেজি |
জিংক অক্সাইড | ১৬ গ্রাম | ১.৬ কেজি | ৪ কেজি |
বোরিক এসিড | ২৮ গ্রাম | ২.৮ কেজি | ৭ কেজি |
সার ব্যবহারের নিয়ম
জমি তৈরির সময় গোবর ও টিএসপির অর্ধেক এবং ইউরিয়া ও পটাশ ব্যতীত অন্যান্য সারের সবটা ক্ষেতের মাটির সাথে মিশতে হবে।
চারা রোপণের সময় সারির নিচে বাকী গোবর ও টিএসপি এবং ইউরিয়ার তিন ভাগের এক ভাগ ও অর্ধেক মিউ: অব পটাশ প্রয়োগ করতে হবে।
বাকী ইউরিয়া ও পটাশ সার দুইভাগ করে বন্ধনী পদ্ধতিতে একভাগ চারা রোপণের ২০দিন পর ও অপর ৩৫ দিন পর দিতে হবে।
আরোও পড়ুন – সরিষার চাষ পদ্ধতি
ফুলকপি চারা রোপণ পদ্ধতি
বীজ গজানোর ১০ থেকে ১২ দিন পর গজানো চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করতে হয়। চারায় ৫ অথবা ৬ টি পাতা হলে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের চারা লাগাতে হয়।
দূরত্ব সারি থেকে সারি ৬০ সেন্টিমিটার বা ২ ফুট, চারা থেকে চারা ৪৫ সেন্টিমিটার বা ১.৫ ফুট।
ফুলকপি চাষে সেচ
ফুলকপিতে প্রচুর পানি লাগে। চারা বিকেলে লাগিয়ে গোড়ায় পানি দিতে হয়। এরপর মাঝে মাঝে সেচ দিতে হয়।
পরিচর্যা
গাছ বড় হবার সাথে সাথে দু’সারির মাঝখান থেকে মাটি তুলে সারি বরাবর আইলের মত করে দিতে হয়। এর ফলে নালা দিয়ে সেচ দিতেও সুবিধে হয়। সেচের পর চটা ভেঙ্গে মাটি আলগা করে দিতে হয়।
ফুলকপির পোকা-মাকড়
জাব পোকা বা লেদা পোকা দেখা দিলে কীটনাশক বা ছিটিয়ে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দমন করা ভল। মারাত্মক আক্রমন হলে ম্যালাথিয়ন অথবা সুমিথিয়ন বা যিথিওল স্প্রে করে এদের দমন করতে পারেন।
আরোও পড়ুন – ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি
ফসল সংগ্রহ
রোপণের আড়াই থেকে তিন মাস পর ফুল সংগ্রহ করা যায়।
ফলন
এক শতকে | একর প্রতি | হেক্টর প্রতি |
৮০-১২০ কেজি | ৮-১১২ টন | ২০-৩০ টন |