জিনসেং চাষ পদ্ধতি

জিনসেং একটি উপকারি ঔষুধি গাছ। বাজারে এই জিনসেং এর দাম প্রচুর হওয়ায় কৃষকরাও এই জিনসেং ভেষজ চাষে আগ্রহী। তাই আসুন জিনসেং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানি।

জিনসেং চাষ পদ্ধতি

জিনসেং এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Panax. জিনসেং গাছ হলো একটি ভেষজ উদ্ভিদ। মূলত এই জিনসেং গাছের মূলকে ঔষুধ তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়। আর জিনসেং এর উপকারিতা অপরিসীম। এই জিনসেং এর উচ্চতা হলো ২০-৭০ সে.মি। মূলত এই জিনসেং কোরিয়া, জাপান, চিন, ভিয়েতনাম, সাইবেরিয়ায় জন্মালেও র্বতমানে এই জিনসেং এর চাহিদা থাকায় বাংলাদেশেও এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে আর কৃষকরাও এই জিনসেং চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তাই চলুন জেনে আসি জিনসেং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।

আরোও পড়তে পারেন – রাবার চাষ পদ্ধতি

জিনসেং চাষের আবহাওয়া, জমি ও মাটি নির্বাচন

জিনসেং গাছের বৃদ্ধি নির্ভর করে অনেকটা আবহাওয়ার উপর। আর নাতিশিতোষ্ণ আবহাওয়ায় জিনসেং এর উৎপাদন ভালো হয়। জিনসেং গাছ চাষের জন্য উর্বর মাটি নির্বাচন করতে হবে। আর যেকোনো ধরণের ঢালু ও উঁচু জমি জিনসেং চাষের জন্য উপযোগী। কারণ, জিনসেং এর মূল মাটির নিচে থাকে আর ধীরে ধীরে বাড়ে।

জিনসেং এর বীজ বা চারা সংগ্রহ

জিনসেং এর বীজ বীজতলায় অঙ্কুরিত হতে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় লাগে। তাই নার্সারী থেকে চারা সংগ্রহ করে জিনসেং চাষ করা উচিৎ। এতে সময় কম লাগে। আর জিনসেং এর বীজ সার বিক্রিকারী ডিলারদের থেকে সংগ্রহ করতে হবে। 

আরোও পড়ুন – আতা ফল চাষ পদ্ধতি ও রোগবালাই

জিনসেং চাষের সময়

যদিও সার বছরই জিনসেং চাষ করা যায় তবে জিনসেং চাষের উপর্যুক্ত সময় হলো বসন্তকাল। কারণ,এসময় জিনসেং চাস করলে জিনসেং এর ভালো ফলন পাওয়া যায়।

জিনসেং রোপন বা চাষ পদ্ধতি

  • জিনসেং চাষের পূর্বে জমির আগাছা সমূহ পরিষ্কার করতে হবে। 
  • জিনসেং এর বীজ বীজতলার মাটিতে প্রায় ১.৫ ইঞ্চি গভীরে বপন করতে হবে।
  • আর জিনসেং চারা জমিতে রোপন বা চাষের ক্ষেত্রে জিনসেং এর চারা শিকড় সহ মাটির ৩ ইঞ্চি গভিরে রোপন করতে হবে।
  • জিনসেং চাষের ক্ষেত্রে কোন রকম সার প্রয়োগের প্রয়োজন নেই।
  • তারপর নিয়মিত জিনসেং এর পরিচর্চা এবং জমিতে সেচ দিতে হবে।
  • জিনসেং পরিপক্ক বা মোটামোটি বড় হতে ৫ বছর সময় লাগে। তাই জিনসেং চাষ করার ৫ বছর পর বিশেষ করে শরৎকালে জিনসেং কাটা উচিৎ এবং সংগ্রহ করতে হবে এবং বাজারজাত করতে হবে।

আরোও জানতে পারেন – তামাক চাষ পদ্ধতি

জিনসেং চাষে সেচ প্রদান

জিনসেং চাষে পরিমিত মাত্রায় চাষের জমিতে জল বা সেচ প্রয়োগ করতে হবে। তবে জিনসেং চাষের জমিতে অতিরিক্ত জল জমতে দেওয়া যাবে না। এতে জিনসেং চাষের জন্য ক্ষতি হতে পারে। তবে বর্ষাকাল আলাদা করে জিনসেং চাষে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

জিনসেং চাষে আগাছা নিয়ন্ত্রন

নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময় পর পর জিনসেং জমির আগাছা নিড়ানির মাধ্যমে পরিষ্কার করতে হবে। এতে জিনসেং এর ফলন বৃদ্ধি পাবে।

জিনসেং চাষে রোগবালাই ও কীটের দমন ব্যবস্থাপনা

স্ট্রিম ব্লাইট, রুট রট-এর মতো পোকারা জিনসেং চাষের ক্ষতি করতে পারে। তাই এসময় জৈব ও রাসায়নিক দুই ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

আরোও জানুন – সবচেয়ে লাভজনক ফল চাষ

কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ, ফসলের চাষ পদ্ধতি, সার প্রয়োগ এবং ফসলের বিভিন্ন রোগ বালাই সম্পর্কে জানতে নিয়মিত ভিজিট করূন Krishakbd.com

FAQs

জিনসেং চারা কোথায় পাওয়া যায়?


জিনসেং চারা সার বিক্রয় কেন্দ্রে পাওয়া যায়।

জিনসেং গাছের দাম কত?


জিনসেং এর দাম সাধারণত এর বয়সের উপর নির্ধারণ করা হয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঔষুধি গাছ।

কিভাবে জিনসেং চাষ করা যায়?


জিনসেং চাষের জমি নির্বাচন করে সেই জমির আগাছা পরিষ্কার করে জমি তৈরী করে সেখানে জিনসেং এর বীজ বপন করে প্রয়োজনীয় পরিচর্চা ও নিয়মিত সেচ দিয়ে জিনসেং চাষ করা যায়।

জিনসেং কত দ্রুত বৃদ্ধি পায়?


জিনসেং পরিপক্ক হতে ৩-৫ বছর সময় লাগে। অর্থাৎ, জিনসেং ৪-৫ বছর বয়সে বৃদ্ধি পায়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *