জিরা চাষ পদ্ধতি

জিরা একটি উপকারি মসলা। সঠিক উপায়ে জিরা চাষ করতে পারলে আপনি হতে পারেন অনেক লাভবান। জানুন জিরা চাষ পদ্ধতি।

জিরা চাষ পদ্ধতি

জিরা আমাদের সকলের পরিচিত একটি জনপ্রিয় মসলা। জিরার ইংরেজি নাম Cumin। আমাদের দৈনন্দিন রান্নার কাজে জিরা প্রচুর ব্যবহার হয়। বিশেষ করে মাছের তরকারিকে সুস্বাদু করে জিারা অনেক উপকার করে। কম বেশি সব রকম রান্নার কাজে জিরা ব্যবহার করা হয় এতে রান্নার স্বাদে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।জিরা চাহিদা ব্যাপক বললে চলে। তাই বাণিজ্যিক ভাবে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে। আজকের আলোচনায় থাকবে জিরা চাষ পদ্ধতি।

জিরা চাষ পদ্ধতি

জিরা একটি উপকারি মসলা তা আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। জিরা চাষের জন্য নীতিশীতোষ্ণ এবং শুষ্ক আবহওয়া উপযুক্ত। তবে সুনিষ্কাষিত উর্বর, গভীর দোঁআশ মাটি জিরা চাষের জন্য উত্তম। তবে বাংলাদেশে শীতকালে জিরা চাষের জন্য উপযুক্ত সময়। তবে আপনি সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে প্রতি হেক্টর থেকে আপনি ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি জিরা ফলন পাওয়া সম্ভব।

জানুন- https://krishakbd.com/rambutan-cultivation-method/

১. জিরার জাত

জিরা প্রধানত চার ধরনের দেখা যায়।যেমন- লম্বা, বেঁটে, গোলাপী ফুল এবং সাদা ফুল। তবে সবচেয়ে গোলাপী ফুল জিরা বেশি চাষ করা হয়ে থাকে।

২. জিরা চাষের মাটি ও জলবায়ু

জিরা চাষের জন্য শুকনা ও ঠান্ডা জায়গা অনেক উপযুক্ত। তাই শীতকালে জিরা চাষের উপযুক্ত সময় বলে বিবেচনা করা হয়। যেখানে অধিক বৃষ্টি এবং মেঘাছন্ন থাকে সেখানে জিরা চাষ ভালো হয় না। আর জিরা চাষের জন্য সুনিষ্কাশিত উর্বর দোঁআশ মাটি বেশি উপযুক্ত।

৩. বীজ হার ও বপন

জিরা আপনি দুই ভাবে চাষ করতে পারেন্। একটি হলো জিরার বীজ ছিটিয়ে এবং অন্য টি হলো সারিতে মা্দা করে। যদি ছিটিয়ে রোপন করেন তাহলে প্রতি হেক্টর জমিতে ১২-১৫ কেজি জিরার বীজ লাগাতে হবে। আর সারিতে মাদা করে লাগালে প্রতি হেক্টরে ৮-১০ কেজি জিরার বীজ লাগবে। তবে সারিতে বপন করলে দূরত্ব হবে ২৫*১৫ সেমি। মনে রাখবেন জিরা রোপন কারার আগে ২-৩ দিন জিরার বীজ ভিজিয়ে রাখবেন।

আরো জানুন- https://krishakbd.com/cultivation-method-of-corn/

৪. বীজ বপনের সময়

জিরার বীজ বপনের উপযুক্ত সময় হলো আক্টোবর-নভেম্বর মাস। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে জিরার বীজ রোপন করতে হবে।

৫. জমি তৈরি ও সার প্রয়োগ

জিরা চাষের জন্য জমিকে ভালো ভাবে চাষ দিতে হবে। যত বেশি চাষ দিবেন তত বেশি জিরা ভালো উৎপাদন হবে। এর জন্য ৫-৮ বার লাঙ্গল এবং মই দিতে মাটি ভালো ভাবে ঝুরঝুরা করে নিতে হবে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ টন গোবর সার চাষের সময় মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং চাষ শেষে ১০ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ফসফেট সার প্রয়োগ করতে হবে।

এর পর বীজ বপনের ৩০ দিন পর একবার এবং ৬০ দিন পর আরেকবার ১০ কেজি ইউরিয়া সার উপরে প্রয়োগ করতে হবে।

আরো জানতে পারেন-জুম চাষ পদ্ধতি | জুম চাষ

৬. জিরার পরিচর্যা

জিরার বীজ বপনের ২৫-৩০ ‍দিন পর আগাছা এবং অতিরিক্ত দূরর্বল চারা তুলে ফেলতে হবে। চারার গোড়া আলগা করে দিতে হবে। জমি বেশি শুকনা হলে হালকা সেচ দিতে হবে এবং পরবর্তী কালে সময় অনুযায়ী ২/৩ বার সেচ দিতে হবে।মনে রাখতে হতে ফুল আসার সময়ে এবং জিরা পুষ্ট হওয়ার সময়ে যেন মাটি শুকনা না থাকে।

৭. রোগ বালাই ব্যবস্থা

জিরায় সাধারনত শুঁয়োপোকা, লেদা পোকা, জাব পোকা, সাদা গুড়ো পোকা, ধ্বসা রোগ, ঝিমিয়ে পড়া ইত্যাদি রোগ দেখা যায়। এই সমস্ত রোগ আসার আগে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৮. ফলন

জাত অনুসারে জিরা ৯০-১১০ দিনের মধ্যে তোলা যায়।জিরার চারা পেকে গেলে ছোট ছোট আঁটি বেঁধে রোদে শুকিয়ে লাটি দিয়ে পিটিয়ে জিরার বীজ। আলাদা করতে হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *