টবে সূর্যমুখী ফুল চাষ পদ্ধতি
আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত এই তৈলবীজ বা সূর্যমূখী ফল এবং সূর্যমূখী তেলের চাহিদা বাড়ছে। বাড়ির সেীন্দর্য বাড়াতে অনেকে ঘরের আঙ্গিনায় বা ছাদে এই ফুল টবে চাষ করছেন। তাই আসুন জেনে নিই টবে সূর্যমূখী ফুল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।
বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সব দেশে সূর্যমুখী ফুলের জনপ্রিয়তা রয়েছে। বর্তমানে বাজরে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা খুবই বেশি কিন্তু সে তুলনায় বাজারে এই তেলের সরবরাহ নেই। তাই বর্তমানে এই সূর্যমুকী তেলের দামও অনেক বেশি।
তাই চাষী ভাইরা বর্তমানে এই সূর্যমুখী ফুল চাষের দিকে বেমি মনযোগী হচ্চেন। কারণ, এই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। তাই আপনারাও চাইলে আপনাদের ঘরের ছাদে বা গৃহের আঙ্গিনায় টবের মধ্যে এই ফুল চাষ করতে পারেন।
তাই, চলুন জেনে আসি টবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।
আরোও পড়তে পারেন – টবে ফুল চাষ পদ্ধতি
টবে সূর্যমূখী ফুল রোপণের সময়
সাধারণত সূর্যমূখী ফুল সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে অগ্রহায়ণ মাসে সূর্যমূখী ফুল চাষ ব রোপর করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
টবে সূর্যমূখী ফুল চাষের পূর্বে টব নির্বাচন
ফুল গাছের চারা রোপনের জন্য উপযুক্ত সাইজের টব নির্বাচন করতে হবে। সূর্যমূখী ফুুল চাষের জন্য মাঝারি কিংবা বড় সাইজের টব খুবই উপযোগী।
আরোও জানতে পারেন – গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি
টবে সূর্যমূখী ফুল চাষের পূর্বে সূর্যমূখী ফুলের চারা বা বীজ সংগ্রহ
সূর্যমুখী চাষের পূর্বে নিকটবর্তী নার্সারি থেকে সূর্যমূখী ফুলের ভালো ও বড় বীজ কিনতে হবে। সূর্যমুখী ফুলের বড় বীজ কনিতে হবে কারণ, এই বড় আকৃতির বীজের ফলে সূর্যমুখী ফুলগুলোও বড় বড় হবে।
টবে সূর্যমূখী ফুল চাষের মাটি সংগ্রহ বা মিশ্রণ তৈরী
সূর্যমুখী ফুল চাষের জন্য উপর্যূক্ত মাটি হলো উর্বর দো-আঁশ মাটি। আর সূর্যমূখী চাষের মাটিটি হতে হবে একটু আলগা ও ঝুড়ঝুড়ে এবং ভালো বায়ুযুক্ত। যদি সূর্যমুখী ফুল চাষের মাটি স্যাঁতসেঁতে বা ভেঁজা হয় সে মাটিতে এই ফুলের চাষ তেমন ভালো হয় না।
এরপর টবের ৩ ভাগের ২ ভাগ দো-আঁশ মাটি নিয়ে তার সাথে জৈব সার ভালোভাবে মিশিয়ে টবে দিতে হবে। মাটিটিকে তৈরি করে নিতে হবে গাছের জন্য। এরপর রোজ দুবেলা করে জল দিতে হবে। কিছুদিন পর দেখতে পাবেন চারা বেরিয়ে গেছে।
আরোও পড়ুন – https://krishakbd.com/cultivation-method-of-gladiolus-flower/
টবে সূর্যমূখী ফূল চাষ বা রোপন পদ্ধতি
টবে সূর্যমূখী ফূল চাষ বা রোপনের পূর্বে টবের মাটিতে সামন্য পরিমাণে গর্ত করতে হবে। তারপর সেই গর্তে এমন ভাবে সূর্যমূখী ফূলে চারা বপন করতে হবে যেন সূর্যমূখী ফূলের চারাগাছটি সোজা থাকে। এছাড়াও সূর্যমূখী ফুলের গাছ সোজা থাকার জন্য প্রয়োজনে একটি লাঠি গেরে চারা গাছের সাথে বেঁধে দিতে হবে।
তারপর চারাগাছের মাটিতে বিভিন্ন জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে পরিমাণ মতো এবং তার পাশাপাশি নিয়মিত টবে গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে।
টবে সূর্যমূখী ফূল চাষে সার প্রয়োগ
টবে সূর্যমুখী ফুল চাষের ক্ষেত্রে জৈব সার বা পঁচা গোবর সার খুবই উপযোগী। তবে ভালো সূর্যমূখীরফলনের জন্য চারা প্রতি ১০ দিন বা দুই সপ্তাহ পর পর একদিন NPK সার দেওয়া উচিৎ।
টবে সূর্যমূখী ফূল চাষে রোগ-বালাই দমণ ব্যবস্থাপণা
সূর্যমূখী ফুলের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকার পোকা হল বিটল পোকা। আর এই পোকা দামণের জন্য কীটনাশক দিওেত হবে অথবা হাত দিয়ে পোকা তুলে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়াও সূর্যমুখী ফুল ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে (যেমনঃ- মরিচা, যা পাতা শুকিয়ে যাওয়া, কান্ড বা পাতায় ক্ষত সৃষ্টি হওয়া ইত্যাদি)। তাই প্রয়োজনে সূর্যমূখী ফুলের গাছে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।
টবে সূর্যমূখী ফূল চাষে ফুল গাছের পরিচর্চা
টবে সূর্যমূখী ফুল চাষের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ রাখতে হবে। আর সেটি হলো সূর্যমুখী গাছের পরিচর্চা নেওয়া। টবে সূর্যমূখী ফুল চাষের সময় টব টি এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে সবসময় আলো-বাতাস থাকে। আর নিয়মিত গাছে পানি দিতে হবে।
আরোও জানুন – রজনীগন্ধা ফুলের চাষ পদ্ধতি
কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ, ফসলের চাষ পদ্ধতি, সার প্রয়োগ এবং ফসলের বিভিন্ন রোগ বালাই সম্পর্কে জানতে নিয়মিত ভিজিট করূন Krishakbd.com
FAQs
সূর্যমূখী ফুল প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা সরাসরি সূর্যালোক সহ উর্বর দোআঁশ মাটিতে ভালো জন্মায়।
৫০০ গ্রাম সূর্যমূখী ফুলের বীজের দাম হলো ৬৫০ টাকা ৭৫০ টাকা।
সূর্যমুখী ফুলের জন্য জৈবসার, নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম খুবই ভালো।
উর্বর জমিতে একজন সূর্যমুখী ফুলের হেক্টর প্রতি উৎপাদন ২.৩ থেকে ২.৫ টন।