আধুনিকভাবে রেড লেডি পেঁপে চাষ পদ্ধতি
পেঁপে খুবই উপকারী ও অর্তকরী ফসল। বাজারে পেঁপের ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় কৃষকরা এটি চাষে মনযোগী হচ্ছেন। চলুন রেডলেডি পেঁপে চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানি।
প্রিয় কৃষকবন্ধু, আজকে আলোচনা করবো রেডলেডি হাইব্রিড পেঁপে চাষ পদ্ধতি, পেঁপের জাত, পেঁপের বিভিন্ন রোগ বালাই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।
পেঁপে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ফল।সবজি হিসেবেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে । পেঁপে অত্যন্ত সুস্বাদু ,পুষ্টিকর এবং ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি ফল। বর্তমানে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি ঢালে ব্যাপক আকারে পেঁপে চাষ করা হচ্ছে।
আরোও পড়ুন –সঠিক নিয়মে রামবুটান চাষ
আমের পরই ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ এর প্রধান উৎস হল পাকা পেঁপে। কাঁচা পেঁপেতে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে যা রোগীর পথ্য। এছাড়াও কাঁচা পেঁপেতে বেশি আয়রন থাকে।
পেঁপের জাত কি কি
- ওয়াশিংটন
- ,হানিডিউ
- রাঁচি
- পুষাজায়েন্ট
- পুষা ম্যাজেস্টি
- সলো
- রেডলেডি
- গ্রীনলেডি ইত্যাদি
পেঁপের বীজ সংগ্রহ
সঠিক জাত এবং গুণগত মানের নিশ্চয়তার জন্য বীজ কেনার সময় ভালভাবে যাচাই বাছাই করে ক্রয় করতে হবে। চায়না ও তাইওয়ানের রেডলেডি বীজ পাওয়া যায় তবে তাইওয়ানের বীজের ফলাফল অনেক ভালো।
আরোও পড়তে পারেন – মাল্টা চাষ পদ্ধতি ও মাল্টার রোগ প্রতিকার
পেঁপের চারা তৈরি করার নিয়ম
- সাধারণত জুন-জুলাই এবং অক্টোবর নভেম্বর মাস পেঁপের চারা উৎপাদনের সময়। হেক্টর প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন;
- ৫X৬ সেঃমিঃ আকারের ব্যাগে সমপরিমাণ বেলে-দোয়াশ মাটি ও পঁচা গোবরের মিশ্রন ভর্তি করে ব্যাগের তলায় দুই থেকে তিনটি ছিদ্র করতে হবে;
- বীজতলায় চারা উৎপাদনের বেলায় ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার উঁচু ১X৩ মিটার আকারের বীজতলা তৈরি করতে হয়। বীজতলার মাটি মিশ্রন হবে এক-তৃতীয়াংশ জৈবসার, এক-তৃতীয়াংশ বালি এবং এক-তৃতীয়াংশ মাটি;
- এরকম বীজতলায় 1 সেন্টিমিটার মাটির গভীরে বীজ বোনার পর ঝরণা দিয়ে পানি দিতে হয়।
আরোও পড়ুন –সঠিক নিয়মে রামবুটান চাষ
পেঁপে চাষের জমি তৈরি ও চারা রোপণ পদ্ধতি
সমতল জমির ক্ষেত্রে জমি ভালোভাবে চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে সমতল করতে হবে ও পানি সরে যাওয়ার জন্য নালা রাখতে হবে যাতে করে জমি সুনিষ্কাশিত হয়।
১.৫ থেকে ২ মাস বয়সের চারা রোপণ করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে ৬০X ৬০X ৬০ সেন্টিমিটার আকারে গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়।
আরোও পড়ুন – কাজুবাদাম চাষ পদ্ধতি
পেঁপের পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন
- পাউডারী মিলডিউ: এ রোগে পেঁপে গাছের পাতার উপর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফুলের গায়ে ধূসর বা সাদা পাউডারের আবরণ পড়ে।
- কান্ড বা গোড়া পঁচা রোগ: এ রোগ হলে পেঁপে গাছের গোড়ায় বাদামী বর্ণের ভেজা দাগের সৃষ্টি হয়। এর ফলে আক্রান্ত চারা গাছ ঢলে পড়ে এবং মরে যায়।
ফল সংগ্রহ
পেঁপে গাছে সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭ থেকে ৯ মাসের মধ্যে। পুষ্ট হওয়ার সময় কোন কোন ফলে হলুদ রং ধারণ করে।
FAQs
পেঁপেকে বাণিজ্যিকভাবে বংশবিস্তার করা হয়ে থাকে। পেঁপের বংশবিস্তার পদ্ধতিটি হলো পেঁপের বীজ বা টিস্যু কালচারের মাধ্যমে।
পেঁপে গাছে ১০-১১ মাস ৩৫০ দিনের মধ্যে ফল ধরে।
পেঁপের মেীসুমে রডলেডি পেঁপের ফলন ৪০-৭৫ কেজি পেঁপের ফলন হয়।
গিনি গোল্ড পেঁপে ও রডলেডি পেঁপে ভালো।
বীজ থেকে পেঁপে জন্মাতে ৬-১২ মাস সময় লাগে।
পেঁপে পাকে না ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে।
পাকা পেঁপেতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৯, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে এবং কয়েক ধরনের ভিটামিন বি থাকে।
পেঁপে ফল এবং সবজি উভয়ই। কারণ, পেঁপে কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া যায় এবং পেঁপে পাকলে ফল হিসেবে খাওয়া হয়।